শনিবার , ১৮ অক্টোবর ২০২৫ , সকাল ০৯:৩১


হাঁটুসমান পানিতে ডুবছে লক্ষ্মীপুর শহর

রিপোর্টার : স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : রবিবার , ২২ জুন ২০২৫ , সন্ধ্যা ০৬:৫১
প্রিন্ট ভিউ

টানা বৃষ্টিতে হাঁটুসমান জলাবদ্ধতা এখন আর আশ্চর্য নয়—এ যেন লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের নিত্যদিনের রূপ। কলেজ রোড, পিটিআই মোড়, শেখ রাসেল সড়ক, প্রফেসর্স কলোনি থেকে শুরু করে দক্ষিণ তেমুহনি ও জেবি রোড—প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা যেন পরিণত হয়েছে জলাবদ্ধতার স্থায়ী চিত্রে। পানি জমে থাকার কারণে ভেঙে পড়েছে জনজীবনের স্বাভাবিকতা।

দোকানপাট খুলতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা, ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে রিকশা ও ভ্যান। দীর্ঘসময় ধরে জমে থাকা পানিতে তৈরি হয়েছে দুর্ঘটনার ফাঁদ। শহরবাসীর অভিযোগ, কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে নেই কোনো জরুরি পদক্ষেপ, এমনকি নেই দুঃখপ্রকাশও।

"প্রতিবছর এই সময় দুর্ভোগ পোহাতে হয়," বলেন প্রফেসর্স কলোনির বাসিন্দা সালমা আক্তার। "ঘর থেকে বের হওয়া যায় না, অথচ কোনো উন্নতি দেখি না।"

শেখ রাসেল সড়কের বাসিন্দা ইয়াহিয়া হতাশা প্রকাশ করে বলেন, "পানি দিনের পর দিন জমে থাকে। পৌরসভায় অভিযোগ করেও কোনো লাভ হয়নি। শুধুই আশ্বাসের আশ্বাস।"

অধিকতর ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে সামাদ মোড় থেকে মোবারক কলোনি পর্যন্ত রাস্তার অসম্পূর্ণ উন্নয়নকাজ। শুরুতেই অনিয়মের অভিযোগে কাজ বন্ধ হয়ে যায়, আর বৃষ্টিতে রাস্তার ইট উঠে তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্ত। এতে করে যানচলাচলও হয়ে উঠেছে বিপজ্জনক।

রিকশাচালক ওসমান বলেন, "এখন তো গর্ত চোখেই পড়ে না। যাত্রী নিয়ে ঢুকলেই পড়ে যায়।"

পৌরসভা সূত্র জানায়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে পৌর অবকাঠামো উন্নয়নে বরাদ্দ ছিল প্রায় ৭ কোটি ২৭ লাখ টাকা, যার বড় অংশ বরাদ্দ ছিল রাস্তা ও ড্রেনেজ উন্নয়নে। তবে বাস্তবে তার প্রতিফলন চোখে পড়ছে না।

লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী রায়হান বলেন, "প্রতিবার বর্ষা আসলেই ভুগি। কিন্তু কোনো স্থায়ী সমাধান নেই।"

পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা খান মোহাম্মদ ফারাভী বলেন, "জলাবদ্ধতা নিরসনে আমরা নিয়মিত কাজ করছি। সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।"

তবে শহরবাসীর প্রশ্ন, "বর্ষা তো হঠাৎ আসেনি, তাহলে আগাম প্রস্তুতি কোথায়?"

একটি আধুনিক শহরে নাগরিকদের রাস্তায় হাঁটুসমান পানিতে চলাফেরা করতে হওয়া কোনোভাবেই স্বাভাবিক হতে পারে না। এটি প্রশাসনিক ব্যর্থতার নগ্ন প্রতিচ্ছবি। পৌর কর্তৃপক্ষ যদি এবারও সচেতন না হয়, তবে ক্ষোভের স্রোত ভবিষ্যতে আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে—এমন সতর্কবার্তা দিচ্ছেন ভুক্তভোগী নাগরিকেরা।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

 
Design and Development By Meghna Host