মুহাম্মদ (সা.) এর শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদাকে নিবেদন করে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রধান মিলনায়তনে সমধারার ৮৬তম সংখ্যার পাঠ উন্মোচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রকাশনা অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, মুহাম্মদ (সা.) একক কোনো জাতি-গোষ্ঠীর নবী নন। তিনি ছিলেন সমগ্র বিশ্বের সব মানুষের নবী। রাহমাতুল্লিল আলামিন (সা.)। মানুষের প্রতি তার দরদ ও ভালোবাসা ছিল অপরিসীম। মুহাম্মদ (সা.)-এর মাধ্যমে ইসলাম পূর্ণতা পেয়েছে। ইসলামের পূর্ণতা আনতে মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনে আত্মত্যাগ ও বিসর্জনের বিশদ এক অধ্যায় রচিত হয়েছে। দ্বীন প্রতিষ্ঠায় এমন ত্যাগী ও সাধক পুরুষ পৃথিবী এর আগে কাউকে দেখেনি। আলোকোজ্জ্বল এই নতুন সভ্যতার ভিত্তি ছিল তাঁর জীবনাচার। তাঁর জীবন ছিল তাঁর বাণীরই মূর্ত প্রতীক। যিনিই মুক্তমনে সত্য অনুসন্ধান করেছেন, তিনিই বিস্মিত, মুগ্ধ হয়েছেন তাঁর বাণীর কালজয়ী রূপ দেখে। জীবন বিশ্লেষণের গভীরতা দেখে। মানবিকতার জয়গান দেখে। নির্মল সত্যের প্রকাশ দেখে। তাঁর বাণী শুধু আধুনিকই নয়; বরং উত্তরাধুনিক। ÔThe 100: A Ranking Of The Most Influential Persons In HistoryÕএই বইয়ের লেখক একজন পাশ্চাত্যের অমুসলিম পণ্ডিত, যার নাম মাইকেল এইচ হার্ট। মাইকেল হার্ট পৃথিবীর ইতিহাসে বা মানব সভ্যতার ইতিহাসে সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ বা সর্বাধিক প্রভাব বিস্তারকারী ১০০ জন ব্যক্তিত্বের তালিকা ও জীবনী প্রকাশ করেছেন তার বইয়ে। মাইকেল হার্টের মতে, এবং তার বইয়ে প্রকাশিত তালিকা মোতাবেক, এই ১০০ জনের মধ্যে ১ নম্বর ব্যক্তি হচ্ছেন বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) তথা মাইকেল হার্টের ভাষায় মুহাম্মদ (সা.) হচ্ছেন মানব সভ্যতার ওপরে, মানব ইতিহাসের ওপরে সর্বাধিক প্রভাব বিস্তারকারী ব্যক্তিত্ব। অতএব, সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব।
বক্তারা আরও বলেন, গত দেড় হাজার বছরে দেশ–বর্ণ–ধর্ম নির্বিশেষে মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে অজস্র প্রকাশনা হয়েছে। অনেক লেখক তাঁর প্রচারিত ধর্ম গ্রহণ না করেও তাঁকে মহামানবের স্বীকৃতি দিয়েছেন। বিশ্বের ঘোর দুর্দিনে তাঁর মতো নেতৃত্বের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন। বলেছেন, সমাজসংস্কারক, ন্যায়বিচারক, সাহসী যোদ্ধা, দক্ষ প্রশাসক, যোগ্য রাষ্ট্রনায়ক এবং সফল ধর্মপ্রচারকের কথা। ''Muhammad: A Prophet For Our Time'' বর্তমান পৃথিবীর জন্য মুহাম্মদ (সা.) হচ্ছেন রোল মডেল। এই শিরোনাম ধরে সমধারা‘র প্রচেষ্টা। সমধারা ৮৬তম সংখ্যাটি প্রকাশ করেছে মুহাম্মদ (সা.)-কে নিবেদন করে। সংখ্যার উল্লেখ্যযোগ্য লেখক হচ্ছেন; মুহম্মদ নুরুল হুদা, ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ, হাসান হাফিজ, প্রফেসর ড. মোহাম্মদ বাহাউদ্দিন, চৌধুরী মনজুর লিয়াকত, একেএমএ হামিদ, ফরিদ আহমদ দুলাল, অজয় দাশগুপ্ত, ড. মামুন আশরাফী, রবি রায়হান, অমিত গোস্বামী, রহীম শাহ, ফরিদা হোসেন, রেজাউর করিম খোকন, আবু তাহের মোহাম্মদ, আনজীর লিটন, তপন বাগচী, রেজাউদ্দিন স্ট্যালিন, কামরুল বাহার আরিফ, বাবুল আনোয়ার, ফকির ইলিয়াস, এস এম জিহাদ ওয়ায়েজ পরাগ।
প্রকাশনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সমধারার উপদেষ্টা সম্পাদক, কোরআন গবেষক, লেখক চৌধুরী মনজুর লিয়াকত রুমী; প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক মুহম্মদ নুরুল হুদা, আলোচনা করেন; ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ, সাবেক চেয়ারম্যান, এনবিআর; হাসান হাফিজ, সিনিয়র সহ সভাপতি, জাতীয় প্রেসক্লাব; ফরিদ আহমদ দুলাল, কবি ও প্রাবন্ধিক; এ এফ এম মাহবুবর রহমান, নজরুল গবেষক; বাবুল আনোয়ার, কবি ও লেখক; ড. মামুন আশরাফী, কবি ও লেখক; রবি রায়হান, কবি ও লেখক; সাজ্জাদুর রহমান, কবি; জালাল খান ইউসুফী প্রমুখ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সমধারা সম্পাদক সালেক নাছির উদ্দিন।
দ্বিতীয় পর্বে মুহাম্মদ (সা.) এর বন্দনায় ‘‘দ্য লাইট’’ শিরোনামে একটি আবৃত্তি প্রযোজনা অনুষ্ঠিত হয়। প্রযোজনায় কোরআন তেলোয়াত, নবীর জীবনী অংশ বিশেষ, কাজী নজরুল ইসলাম ও গোলাম মোস্তাফা রচিত নাত, নবী বন্দনায় নজরুল সঙ্গীত ও রবীন্দ্র সঙ্গীত এবং কবিতা আবৃত্তি। অংশগ্রহণ করেন শিল্পী লাবণ্য সুধা, নিশি কাওসার, মাসুম আজিজুল বাসার, পলি পারভীন, মাসুদ রানা, মেহেদী হাসান আকাশ, আইরিন আহমেদ, ঋতুরাজ ফিরোজ, আহমেদ মাসুম, মনোয়ারা রহমান লুবনা, জান্নাতুল ফেরদৌস মুক্তা, অনন্যা রেজওয়ানা, মোহনা হোসেন,, জান্নাত আরা মমতাজ. এস এম জিহাদ ওয়ায়েজ পরাগ, আবদুল্লাহ আল মামুন এবং সালেক নাছির উদ্দিন। এক ঘন্টার এই আয়োজনটি মুগ্ধতা ছড়িয়েছে।