শনিবার , ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ , রাত ১০:৫৩


তুলসি পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা

রিপোর্টার :
প্রকাশ : সোমবার , ২৯ মে ২০২৩ , সকাল ১০:৪৫
প্রিন্ট ভিউ

তুলসি পাতা উপকারী একথা প্রায় সবারই জানা।কিন্তু তুলসিপাতা খেলে কোনো উপকারগুলো পাওয়া যায় সেকথা অনেকেরই অজানা।ওষুধ হিসেবে তুলসিপাতার ব্যবহার বেশ পুরোনো।এই পাতায় আছে অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি ও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপাদান।এগুলো মারাত্মক সব রোগ যেমন ক্যান্সার,ডায়াবেটিস,হৃদরোগ ইত্যদির বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে পারে।এটি নানা গুণে অনন্য বলেই হাজার বছর ধরে যোগ আছে ওষুধের তালিকায়।জেনে নিন তুলসি পাতার কিছু উপকারিতা সম্পর্কে-

সর্দি-কাশি কমিয়ে দেয় এটি খুব পরিচিত চিত্র যে,ঠান্ডা লাগলে অর্থাৎ সর্দি-কাশি হলে তুলসি পাতা খাওয়া হয় ওষুধ হিসেবে।সর্দি ও কাশি সারাতে এটি খুব দ্রুত কাজ করে।কারও বুকে কফ বসে গেলে তাকে প্রতিদিন সকালে তুলসি পাতা,আদা ও চা পাতা ভালোভাবে ফুটিয়ে তাতে মধু ও লেবু মিশিয়ে খেতে দিন।এতে দ্রুতই উপশম মিলবে।

গলা ব্যথা দূর করে।গলা ব্যথার সমস্যায় ভুগলে আস্থা রাখুন তুলসি পাতায়।কারণ এই সমস্যা দূর করতে তুলসি পাতার জুড়ি মেলা ভার।শ্বাসকষ্টের সমস্যা কমাতেও তুলসি পাতা বেশ উপকারী।করোনা মহামারির এই সময়ে তাই নিয়মিত তুলসি পাতা খাওয়ার অভ্যাস করুন।কয়েকটি তুলসি পাতা ফুটিয়ে সেই পানি দিয়ে গার্গল করলে গলা ব্যথা দ্রুত সেরে যায়।

ক্যান্সার প্রতিরোধ করে,ক্যান্সার এক মরণঘাতি অসুখের নাম।এই অসুখ দূরে রাখতেও সাহায্য করে তুলসি পাতা।

এই পাতায় আছে রেডিওপ্রটেকটিভ উপাদান যা টিউমারের কোষগুলোকে মেরে ফেলে।এতে আরও আছে ফাইটোকেমিক্যাল যেমন রোসমারিনিক এসিড,মাইরেটিনাল, 

লিউটিউলিন এবং এপিজেনিন।এসব উপাদান ক্যান্সারের বিরুদ্ধে কাজ করতে কার্যকরী।অগ্নাশয়ে যে টিউমার কোষ দেখা দেয় তা দূর করতেও তুলসী পাতা দারুণ উপকারী।পাশাপাশি দূরে রাখে ব্রেস্ট ক্যান্সারও।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়,রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে তুলসি পাতা।অ্যাজমা,ফুসফুসের সমস্যা,ব্রঙ্কাইটিস ইত্যাদি মোকাবিলায় কাজ করে এই পাতা।জ্বর সারাতেও তুলসি পাতা সমান উপকারী।তুলসি পাতা ও এলাচ পানিতে ফুটিয়ে সেই পানি পান করলে খুব সহজেই বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।ক্ষতস্থানে তুলসি পাতা বেটে লাগালে তা দ্রুত শুকায়।

ওজন কমায়,তুলসি পাতা খেলে তা রক্তে সুগারের মাত্রা ও কোলেস্টরল দুটোই রোধ করে।তাই খুব সহজেই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে যে,তুলসি দিয়ে তৈরি ২৫০ মিলিগ্রামের একটি ক্যাপসুল প্রতিদিন খাওয়ার ফলে ওবেসিটি ও লিপিড প্রোফাইল নিয়ন্ত্রণ করা যায়।তবে যেকোনো ওষুধ খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

ডায়াবেটিস দূরে রাখে,তুলসি পাতা ইনসুলিন উৎপাদনের কাজ করে।প্রতিদিন খাওয়ার আগে তুলসি পাতা খেলে রক্তে সুগারের মাত্রা কমে।তুলসি অ্যান্টি ডায়াবেটিক ওষুধের কাজ করে।তুলসিতে থাকা স্যাপোনিন,ত্রিতারপিনিন ও ফ্ল্যাবোনয়েড ডায়বেটিস রোধ করতে কার্যকরী।

তুলসি পাতা উপকারী। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে এটি এড়িয়ে যাওয়া বা না খাওয়াই উত্তম।চলুন জেনে নেওয়া যাক কোন কোন ক্ষেত্রে তুলসি পাতা এড়িয়ে চলবেন-

গর্ভাবস্থা বা স্তন্যপান করানোর সময়,সামান্য তুলসি পাতা খেলে তা ক্ষতিকর নয় তবে অতিরিক্ত তুলসি পাতা খেলে এসময় নানা রকম জটিলতা দেখা দিতে পারে।তাই এই সময়গুলোতে তুলসি এড়িয়ে চলাই উত্তম।এঅতিরিক্ত তুলসি পাতা খেলে তা নারীর ক্ষেত্রে হতে পারে বন্ধ্যাত্বের কারণ।তাই পরিমিত গ্রহণ করতে হবে।

রক্তপাতের সমস্যা দেখা দিতে পারে,তুলসি পাতা অতিরিক্ত খেলে তা শরীরে রক্তের প্রবাহ বাড়িয়ে দিতে পারে।ফলে শরীরের স্বাভাবিক রক্ত জমাট হওয়ার প্রবণতা নষ্ট হয়ে যায়।এ কারণে দেখা দিতে পারে অতিরিক্ত রক্তপাতের সমস্যা।যেকোনো সার্জারির দুই সপ্তাহ আগে থেকে তুলসি পাতা খাওয়া বন্ধ রাখুন।

নিম্ন রক্তচাপ,তুলসি পাতায় থাকে অতিরিক্ত পটাশিয়াম।ফলে কমে যেতে পারে রক্তচাপ।তাই কারও নিম্ন রক্তচাপের সমস্যা থাকলে তুলসি পাতা না খাওয়াই ভালো।এই ক্ষেত্রগুলোতে সতর্ক থাকলেই তুলসি পাতা খাওয়া নিরাপদ।এর অনন্য সব উপকারিতার জন্য নিয়মিত খেতে পারেন।